প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণের সময় হাতেনাতে রাজধানীর কলেজগেটের সামনে থেকে গত শনিবার রনি (৩৫) নামের এক ব্যবসায়ীকে আটক করেন পথচারীরা। পরে ওই ব্যবসায়ীকে গণপিটুনি দিয়ে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এর একদিন পরে রবিবার (১০ জুন) ধর্ষণের শিকার তরুণী রিনা (২১) (ছদ্মনাম) সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করেন।
জানা গেছে, ওই তরুণীর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনী উপজেলায়। বর্তমানে তিনি রাজধানীর শ্যামলীর একটি বস্তিতে ভাড়া থাকেন।
সোমবার (১১ জুন) ওই বস্তিতে যায় এই প্রতিবেদক। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই তরুণীর বাসায় তালা দেয়া। এ কারণে ওই তরুণী বা তার পরিবারের কোন সদস্যকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিবেশীরা জানান, গতকাল রাতে পুলিশ রিনাকে (ছদ্মনাম) নিয়ে গেছেন।
টিনসেড ওই বস্তিতে ছোট দুই রুম ভাড়া নিয়ে থাকেন রিনা। বাড়িওয়ালা শফিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, রিনার একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। মা ও বড় ভাইকে সাথে নিয়ে দুইটি রুমে থাকেন এই পরিবারটি। রিনার কথিত স্বামী তার সাথে থাকেন না। তবে মাঝে মাঝে বাসায় আসেন। তবে রিনা রাত করে বাসায় ফেরার কারণে বাড়ি ছাড়ার জন্য কয়েকবার নোটিশ দিয়েছেন বাড়িওয়ালা।
রিনার এক প্রতিবেশি জানান, রিনা নেশায় আসক্ত। প্রতিনিয়ত তিনি ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের নেশা করে থাকেন। এছাড়াও বিভিন্ন অশ্লীল কাজে লিপ্ত থাকেন রিনা। তাছাড়া বস্তির সবাই জানে সে একজন দেহ ব্যবসায়ী।
শেরেবাংলা থানা সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধর্ষিতাকে গতকাল রবিবার (১০ জুন) থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আজ সোমবার (১১জুন) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে মাহমুদুল হক রনিকে (৩৫) শেরেবাংলা নগর থানা থেকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণ মামলায় রনিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করে আরও বলেন, অভিযুক্ত মাহমুদুল হক রনিকে সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আটকের সময় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়া গাড়ির চালক ফারুককে গ্রেপ্তারসহ ঘটনার বিষয়ে আরও তথ্য জানতে আসামীকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে রাজধানীর কলেজগেট সিগন্যালে প্রাইভেটকারের (ঢাকা মেট্রো- গ ২৯-৫৪১৪) ভেতরে এক তরুণীকে ধর্ষণকালে মাহমুদুল হক রনি ও গাড়িচালক ফারুককে আটক করেন সাধারণ মানুষ। এ সময় রনি ও ফারুককে ব্যাপক মারধর করে উপস্থিত জনগণ। একপর্যায়ে ফারুক বিবস্ত্র অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। আর রনিকে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন জনতা।